ওয়েবডিফাই বিডি - সর্বশেষ ব্লগার টেমপ্লেট, ব্লগারের জন্য এসইও, ওয়েবসাইট অপ্টিমাইজেশন, শীর্ষস্থানীয় ফ্রি ব্লগার টেম্পলেট, ইনকাম অ্যাপ্লিকেশন, ব্লগিং টিপস 2020,

08 December, 2019

বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক, গাজীপুর - Bangabandhu Safari Park Gazipur

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক (Bangabandhu Safari Park) গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নে অবস্থিত। ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক ধরে ৪০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত বাঘের বাজার থেকে ৩ কিলোমিটার পশ্চিম দিকে এগিয়ে গেলেই বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে প্রবেশ দ্বার দেখতে পাবেন। প্রায় ৩,৬৯০ একর জায়গা জুড়ে গড়ে ওঠা বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক ছোট ছোট টিলা ও শালবন সমৃদ্ধ। থাইল্যান্ডের সাফারী ওয়ার্ল্ডের অনুকরণে তৈরি সাফারী পার্কটি ২০১৩ সালে চালু করা হয়। এই সাফারি পার্কের অন্যতম আকর্ষণ কোর সাফারি। চারপাশে উন্মুক্ত বাঘ, সিংহ, জিরাফ, জেব্রা, বন্য হরিণ ও অন্যান্য প্রাণী হেঁটে বেড়াচ্ছে আর তার মাঝ দিয়ে আপনি মিনিবাসে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। হয়তো হঠাৎ সামনে থেকে এক বাঘ রাস্তা আটকিয়ে দিলো কিংবা জানালার পাশে এসে সিংহ গর্জন দিয়ে উঠলো। এমন অভিজ্ঞতা পেতে ঢাকা ও আশপাশ থেকে সারাদিন পরিবার নিয়ে ঘুরে বেড়াবার জন্যে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক হতে পারে আদর্শ ঘুরে বেড়াবার জায়গা।
পুরো বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কটি বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, কোর সাফারি পার্ক, বায়োডাইভার্সিটি পার্ক, সাফারি কিংডম, এক্সটেনসিভ এশিয়ান সাফারি পার্ক নামক ৫ টি অংশে বিভক্ত।

বঙ্গবন্ধু স্কয়ার

সাফারি পার্কের ৩৮ একর জায়গা নিয়ে বঙ্গবন্ধু স্কয়ার তৈরি করা হয়েছে। পার্কিং এলাকা, বিনোদন উদ্যান ও প্রশাসনিক কাজে নির্মিত ভবনগুলো বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে স্থান পেয়েছে। এছাড়াও এখানে রয়েছে আকর্ষণীয় ম্যুরাল ও মডেল সজ্জিত প্রধান ফটক, ফোয়ারা ও লেক। প্রশাসনিক ভবনগুলোর পাশাপাশি আরও রয়েছে ডিসপ্লে ম্যাপ, পার্ক অফিস, তথ্যকেন্দ্র, বিশ্রামাগার, ডরমেটরি, নেচার হিস্ট্রি মিউজিয়াম, ইকো-রিসোর্ট ইত্যাদি।
Vromon Guide App





কোর সাফারি

১২১৭ একর অঞ্চল জুড়ে গঠিত কোর সাফারি অংশে গাড়ি ছাড়া পর্যটক প্রবেশ সম্পূর্ন নিষেধ। এখানে দর্শনার্থীদের জন্য দুটি জিপ ও দুটি মিনিবাস বরাদ্ধ রাখা হয়েছে। নির্দিষ্ট ফি’র বিনিময়ে যে কেউ গাড়ি বা জিপে প্রাকৃতিক পরিবেশে রাখা বিভিন্ন বন্য প্রাণী দেখতে পারবেন। এখানে বাঘ, সিংহ, কালো ভাল্লুক, আফ্রিকান চিতা, চিত্রা হরিণ, সাম্বার, গয়াল, হাতি, মায়া ও প্যারা হরিণ ছাড়াও অনেক বন্য প্রাণীকে খোলা পরিবেশে ঘুরতে দেখবেন।
Vromon Guide App

সাফারি কিংডম

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ৫৫৬ একর জায়গা জুড়ে সাফারি কিংডম তৈরি করা হয়েছে। সাফারি কিংডমের শুরুতেই রয়েছে ম্যাকাও ল্যান্ড, এখানে আফ্রিকা থেকে আনা প্রায় ৩৪ প্রজাতির বিভিন্ন রকম পাখি রয়েছে। ম্যাকাও ল্যান্ডের পাশে রয়েছে প্রায় ২০ প্রজাতির মাছ সমৃদ্ধ মেরিন অ্যাকুরিয়াম। যার মধ্যে টাইগার ফিস, ক্রোকোডিল ফিস, অস্কার, ব্ল্যাক গোস এবং ২০ সেকেন্ড অন্তর অন্তর রং পরিবর্তন কারী চিকলেট মাছ উল্লেখযোগ্য।
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের আকর্ষন বাড়িয়েছে বিশাল আকারের টাইগার রেস্তোরাঁ ও সিংহ পর্যবেক্ষণ রেস্তোরাঁ। এখানে খাবার টেবিলে বসেই কাচের অন্য পাশে সিংহ কিংবা বাঘের ঘুরোঘুড়ি দেখতে পারবেন। বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে এশিয়া বিলুপ্তপ্রায় বন্য প্রাণীর মধ্যে আছে ক্ষুদ্রকায় ঘোড়া, আল পাকা, ওয়ালাবি, মান্ডারিং ডাক, ক্রাউন ক্রেইন ইত্যাদি।
এছাড়াও সাফারি কিংডমে তিনটি পাখিশালা, প্রজাপতি সাফারি, অর্কিড হাউজ, জিরাফ ফিডিং স্পট, শকুন ও পেঁচা কর্নার, ফ্যান্সি কার্প গার্ডেন, এগ ওয়ার্ল্ড, বোটিং, লেইক জোন, আইল্যান্ড ও প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্র দেখতে পারবেন।

প্রবেশ মূল্য ও অন্যান্য খরচ

সাফারি পার্ক প্রবেশঃ সকল বাংলাদেশিদের জন্য পার্কে প্রবেশ টিকেটের মূল্য ৫০ টাকা তবে ১৮ বছরের নিচে ছেলেমেয়েরা ২০ টাকায় পার্কে প্রবেশ করতে পারে। আর সাধারণ অথবা শিক্ষা সফরে আসা ছাত্রছাত্রীদের পার্কে প্রবেশ করতে ১০ টাকা দিতে হয়। বিদেশী দর্শনার্থীদের জন্য পার্কে প্রবেশ মূল্য ৫ ডলার।
এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা সফরে আগতদের জন্যে স্পেশাল প্রবেশ ফি রয়েছে। যদি শিক্ষা সফরে আসা শিক্ষার্থীদের গ্রুপ ৪০-১০০ জন হয় তাহলে সবার প্রবেশ করতে ৪০০ টাকা লাগবে। যদি শিক্ষার্থী সংখ্যা ১০০ এর বেশি হয় তাহলে প্রবেশ করতে ৮০০ টাকা লাগবে।
কোর সাফারি পার্ক প্রবেশ ফিঃ কোর সাফারি পার্ক যেখানে খোলা পরিবেশে জীব জন্তু ঘুরে বেড়ায় তার মাঝ দিয়ে জীপ ও মিনিবাসে ঘুরে দেখতে জনপ্রতি ১০০ টাকা প্রদান করতে হবে। ১৮ বছরের কম বয়সী এবং ছাত্র/ছাত্রীদের জন্য প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ৫০ টাকা। মিনিবাসে করে ২০ মিনিট ঘুরিয়ে দেখাবে।
পার্কের অন্যান্য জায়গাতে প্রবেশ করতেও টিকেট কেটে প্রবেশ করতে হবে। সব গুলো স্পট দেখতে মোটামুটি ২০০-৩০০ টাকা লাগবে। একসাথে কয়েকটি স্পট দেখার প্যাকেজ ও পাওয়া যায়। এছাড়া প্যাডেল বোটে ৩০ মিনিট ভ্রমণ করতে জনপ্রতি ২০০ টাকা খরচ হবে।
পার্কিং ভাড়া : প্রতিটি বাস, কোচ বা ট্রাক এর পার্কিং ভাড়া ২০০ টাকা। মাইক্রোবাস বা মিনি বাসের পার্কিং ভাড়া ১০০ টাকা। জিপ, প্রাইভেট কার, অটোরিক্সা বা সিএনজির পার্কিং ভাড়া ৬০ টাকা।
(সময় ভেদে সকল ভাড়া পরিবর্তিত হতে পারে)

পরিদর্শনের সময়

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের ছয় দিন সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক বন্ধ থাকে। পুরোটা ঘুরে দেখতে চাইলে সারাদিন চলে যাবে। তাই সবচেয়ে ভালো হয় যদি সকাল সকাল চলে যান। তাহলে আরামে সারাদিন ঘুরে ঘুরে সব অংশ দেখতে পারবেন।

যোগাযোগ

বন সংরক্ষক
বন্য প্রানী ও প্রক্তি সংরক্ষক অঞ্চল
বন ভবন, আগারগাও, ঢাকা
মোবাইল: +88-01727-329816
পিকনিক, স্পট বুকিং ও যে কোন প্রয়োজনে: 01776619279,
ওয়েবসাইট: safariparkgazipur.info.bd

সাফারি পার্ক যাবার উপায়

ঢাকার মহাখালী থেকে শ্রীপুর, ভালুকা কিংবা ময়মনসিংহ গামী বাসে গাজীপুরের চৌরাস্তা অতিক্রম করে কিছুটা গেলে বাঘের বাজারে সাফারি পার্কের বিশাল সাইনবোর্ড দেখতে পাবেন। বাঘের বাজার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক যেতে রিকশা বা অটোরিকশা ভাড়া লাগবে ২০-৪০ টাকা।
এছাড়া গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে বাঘের বাজার যাওয়ার জন্য কিছু হিউম্যান হলার রয়েছে। সেগুলোতে বাঘের বাজার গিয়ে রিক্সা বা অটোরিক্সাতে সাফারি পার্ক যেতে পারবেন। দেশের অন্য কোন প্রান্ত থেকে আসতে চাইলে চলে আসুন গাজীপুর। তারপর উপরে উল্লেখিত জায়গায় চলে যান আপনার পছন্দমত যাতায়াত ব্যবস্থা দিয়ে।

পর্যটকদের জন্য পরামর্শ

– পানীয়ের বোতল, পলিথিন বা কোন অপচনশীল দ্রব্যসহ, যেকোন আবর্জনা নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে ফেলুন।
– বাঘ ও সিংহের পরিদর্শনকালে চলন্ত গাড়ি থেকে নামবেন না।
– হিংস্র বন্য প্রাণীর খাচা থেকে দূরে থাকবেন।
– সতর্কতা বার্তা যেখানে যা লিখা আছে মেনে চলুন।
– মাইক বাজানো বা উচ্চ শব্দ সৃষ্টিকারী কোন যন্ত্র ম্যবহার করবেন না।
– বিশ্রামাগার ব্যবহার করতে চাইলে অগ্রিম বুকিং দিয়ে নিন।
– বন্যপ্রাণিদের খাবার প্রদান থেকে বিরত থাকুন।
– বাইরে থেকে কোন খাবার নিয়ে পার্কে প্রবেশ করা যাবেনা।


1 comment:

you are comment our site please read more your comment privacy & policy. Thanks You ☺ @Rakibulhasan399 #রাকিবুল_হাসান_রনি